পুলিশে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা চাকরির জন্য কি কি কাগজ লাগে, কত পয়েন্ট লাগবে। ছেলে মেয়েদের পুলিশের চাকরির জন্য শারীরিক যোগ্যতা সকল বিষয় আজকে জানতে পারবেন। শান্তি শৃঙ্খলা নিরাপত্তা প্রগতি এই নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশের একমাত্র আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স
এসএসসি বা সমমান পাস প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। প্রার্থীদের উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ থাকতে হবে ২ দশমিক ৫ ।
আবেদনের জন্য প্রার্থীদের বয়স বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া তারিখে ১৮ থেকে ২০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর। আবার মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সন্তান হলে বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই হতে হবে।
আরো পড়ুনঃ পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) যোগদানের যোগ্যতা, বেতন ও কাজ
শারীরিক যোগ্যতা
পুলিশে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা পুরুষ প্রার্থীদের জন্য উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে।মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আগ্রহী পুরুষ প্রার্থীদের জন্য উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং বুক স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি মিটার হতে হবে। উপজাতীয় কোটায় পুরুষ প্রার্থীদের জন্য উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি হতে হবে। নারী প্রার্থীদের জন্য সব কোটায় উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে।
প্রার্থীদের ওজন উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী নির্ধারণ করা হবে। শুধু অবিবাহিত নারী ও পুরুষরা TRC আবেদন করতে পারবেন। এখন দেখে নেই বাছাই প্রক্রিয়া। সাধারণত ৪ টি ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে তারা। তার মধ্যেঃ
প্রথমেই শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা
নির্ধারিত তারিখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিজ জেলার পুলিশ লাইনস মাঠে উপস্থিত হতে হবে। শারীরিক মাপ পরীক্ষায় প্রথমেই বিজ্ঞপ্তির বর্ণণা অনুযায়ী বয়স, উচ্চতা, বুকের মাপ এবং ওজন ঠিক আছে কিনা মিলিয়ে নেয়া হয়। বয়সের সঙ্গে উচ্চতা ও ওজনের সামঞ্জস্য আছে কিনা তাও দেখা হয়। এরপর অংশ নিতে হবে দৌড়ে। ফিটনেস যাচাইয়ের জন্য হতে পারে লং জাম্প পরীক্ষাও।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ব্যায়ামের উপযোগী পোষাক সাথে রাখতে পারেন। লং জাম্প বা দৌড় পরীক্ষায় অন্য প্রার্থীদের চেয়ে ভালো করতে চাইলে আগেই নিজ উদ্যোগে এ ধরনের ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে পারো।
শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় টিকলে পরের পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র দেয়া হবে। লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় এ প্রবেশপত্র সাথে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ নার্স কি কিভাবে হবেন | নার্সদের বেতন সুযোগ সুবিধা ২০২৪
২য়ত লিখিত পরীক্ষার
লিখিত পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পূর্ণমান ৪০। পরীক্ষায় পাস করতে হলে কমপক্ষে ৪৫% অর্থাৎ অন্তত ১৮ নম্বর পেতে হবে। যেহেতু শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি চাওয়া হয়েছে, সে উপযোগী প্রশ্নই করা হয়। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির ইংরেজি, বাংলা এবং সাধারণ গণিত বই আয়ত্ত্বে থাকলে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে। লিখিত পরীক্ষার কয়েকদিনের মধ্যেই উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
৩য়ত মৌখিক পরীক্ষা
মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। পাস করতে হলে এ ধাপেও কমপক্ষে ৪৫% নম্বর পেতে হবে। ভাইভা বোর্ড প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং সাধারণ জ্ঞান বা সাম্প্রতিক বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে। প্রার্থীর মনস্তাত্ত্বিক দক্ষতা যাচাইয়ের জন্যও প্রশ্ন করা হতে পারে। ভাইভা বোর্ডে মার্জিত এবং পদের সাথে উপযুক্ত পোষাক পরে উপস্থিত হওয়া ভালো। ভালোভাবে সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারলে এবং নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।
সর্বশেষ চূড়ান্ত নির্বাচন
লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাতালিকা করা হবে। নির্বাচিতদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে যোগ্য বিবেচিত হলে প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগ দেওয়ার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত পুনর্বাছাই কমিটি শারীরিক যোগ্যতা ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করবে। চূড়ান্ত বাছাইয়ে যোগ্য প্রার্থীরা ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল বা TRC হিসেবে ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন।
আশা করছি, আপনারা পুলিশের চাকরির যোগ দেওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। ফাস্টবিডিইনফো সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।